অসাধারণ একটি শিক্ষণীয় গল্প যা জীবনে অনুপ্রেরণা জাগাবে।
একদিন বাবা ও তার ছেলে তাদের পোষা গাধাটিকে বিক্রি করার জন্য হাট বা বাজারের পথে রওনা দিলেন। বাবা, ছেলে ও গাধা তিনজনই হেঁটে যাচ্ছেন। কিছুদূর যাওয়ার পর একজন লোক তাদের দেখে বললো, ‘এরা কত বোকা! গাধা থাকতে হেঁটে যাচ্ছে। একজন তো গাধার পিঠে উঠে আরাম করে যেতে পারে’।
লোকটির কথা শুনে অগত্যা বাবা তার ছেলেকে গাধার পিঠে উঠিয়ে দিলেন। ছেলে গাধার পিঠে আর বাবা হেঁটে চলেছেন।
কিছুদূর যাওয়ার পর আর একজন বললো, ‘কী বেয়াদব, অভদ্র ছেলেরে! নিজে গাধার পিঠে আর বুড়ো বাপকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’
এ মন্তব্য শোনার পর বাবা ও ছেলে আবারো স্থান পরিবর্তন করলেন। এবার বাবা গাধার পিঠে উঠলেন আর ছেলে হেঁটে চললেন।
আরও কিছুদূর যাওয়ার পর আর এক পথচারী মন্তব্য করে বসলো, ‘কী নিষ্ঠুর পিতা! নিজে গাধার পিঠে উঠে চড়ছে আর মাসুম বাচ্চাটিকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জমানা সত্যি খারাপ হয়ে গেলো!’
লোকটির কথা শুনে অগত্যা বাবা তার ছেলেকে গাধার পিঠে উঠিয়ে দিলেন। ছেলে গাধার পিঠে আর বাবা হেঁটে চলেছেন।
কিছুদূর যাওয়ার পর আর একজন বললো, ‘কী বেয়াদব, অভদ্র ছেলেরে! নিজে গাধার পিঠে আর বুড়ো বাপকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’
এ মন্তব্য শোনার পর বাবা ও ছেলে আবারো স্থান পরিবর্তন করলেন। এবার বাবা গাধার পিঠে উঠলেন আর ছেলে হেঁটে চললেন।
আরও কিছুদূর যাওয়ার পর আর এক পথচারী মন্তব্য করে বসলো, ‘কী নিষ্ঠুর পিতা! নিজে গাধার পিঠে উঠে চড়ছে আর মাসুম বাচ্চাটিকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জমানা সত্যি খারাপ হয়ে গেলো!’
এ মন্তব্য শোনার পর বাবা ও ছেলে দু’জনই গাধার পিঠে উঠলো। গাধা চলতে শুরু করলো। কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর তাদের দেখে আর একজন আক্ষেপ করে বললো, ‘কী অত্যাচার! কী অবিচার! একটি গাধা তার উপর দুটি লোক!’
বাবা ও ছেলে পড়ল মহাসমস্যায়। কী মুশকিল! গাধার সাথে হেঁটে গেলেও দোষ! ছেলে উঠলেও দোষ! আবার বাবা উঠলেও দোষ! দু’জন একসাথে উঠলেও দোষ! এখন কী করা যায়?
বাবা ও ছেলে মিলে নতুন বুদ্ধি বের করল। তারা বাঁশ ও রশি যোগাড় করল। তারপর সেই রশি দিয়ে গাধার চার পা বাঁধলো। তারপর পায়ের মধ্যখান দিয়ে বাঁশ ঢুকিয়ে দিলো। বাবা সামনে আর ছেলে পিছনে বাঁশ কাঁধে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলো। গাধা রইলো ঝুলে। গাধাকে কাঁধে নিয়ে ছোট ব্রিজ পার হওয়ার সময় গাধা ভয় পেয়ে নড়ে উঠলো। বাবা, ছেলে ও গাধা পড়ে গেলো খালে। গাধার মেরুদন্ড ভাঙল। বাবা ও ছেলের ভাঙল পা। গাধা আর বিক্রি করা হলো না। বাবা ও ছেলে আহত অবস্থায় বাড়ি ফিরে এলো।
বর্ণিত গল্পটি বেশ প্রাচীন, কিন্তু আবেদনটা স্থায়ী। লোকের আলোচনা-সমালোচনাকে যারা খুব বেশি গুরুত্ব দেয় বা ভয় পায় তাদের জন্য এ গল্পটি দারুন শিক্ষণীয়।
অন্যের সমালোচনাকে কখনোই খুব বেশি প্রাধান্য দিলেই পরিণতি হবে গল্পে বর্ণিত বাবা-ছেলের মতো।
এতে নষ্ট হবে মনের স্বাধীনতা, মানসিক প্রশান্তির বদলে ভুগবেন অশান্তিতে।
অন্যের সমালোচনাকে কখনোই খুব বেশি প্রাধান্য দিলেই পরিণতি হবে গল্পে বর্ণিত বাবা-ছেলের মতো।
এতে নষ্ট হবে মনের স্বাধীনতা, মানসিক প্রশান্তির বদলে ভুগবেন অশান্তিতে।
মনে রাখা উচিত, যারা সবসময় আপনার নেতিবাচক সমালোচনা করে, তাদের মূল লক্ষ্য আপনার ভুল ধরিয়ে দেওয়া নয়, বরং আপনার সুখ দেখে তারা ঈর্ষান্বিত হয়! এমনও দেখা যায়, আপনাকে ভুল পথে পরিচালিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য! তাই এই ধরণের নিন্দুকের কথা এক মিনিট চিন্তা করা মানেই আপনার মূল্যবান সময় থেকে এক মিনিট অপচয় করছেন।
তবে হ্যাঁ, একথাও সত্য যে সব সমালোচনাই খারাপ নয়। যখন প্রকৃত শুভাকাংখীরা আপনার সমালোচনা করবেন, পরামর্শ দিবেন, তখন চিন্তা করুন আপনার অজান্তে সজ্ঞানে কোথাও হয়তো কোনো ভুল হচ্ছে। ভুলের উৎস অনুসন্ধান করুন এবং সে-অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।
আপনি কোথায় বেড়াতে যাবেন, কোথায় ঘুরতে যান,কার সাথে বন্ধুত্ব করবেন সবকিছুই বা কোন কিছুই যদি অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন বুঝবেন, জীবনে স্বতন্ত্র বোধ, নিজস্বতা বা স্বকীয়তার অনেকটাই আপনার ধারে কাছেই নেই।
নিজের জীবনের ক্যালেন্ডার নিজেই ঠিক করুন: কখন একা দূর আকাশের তারা খুঁজে বেড়াবেন, কখন পরিবারসহ সমুদ্রে আঁছড়ে পড়া অগণিত ঢেউয়ের ছন্দ, সাগরের গর্জন উপভোগ করবেন, কখন মেঘের উপরে, পর্বতের চূড়ায় উঠে ভাববেন না-ভাবা শত কল্পনা, কখন বন্ধু-স্বজনেরা মিলে মন খুলে অট্টহাসি দিয়ে, প্রাণের আড্ডায় মেতে উঠে দূর করবেন যত অপ্রাপ্তি,
নীরব হতাশা আর নেতিবাচকতা- তার সবটাই পরিকল্পনা করুন নিজেই। জীবনটা আপনার। মহাকবি রুমির ভাষায়, ‘তুমি সাগরে এক বিন্দু পানি নও। তুমি এক বিন্দু পানিতে গোটা এক সাগর।
নীরব হতাশা আর নেতিবাচকতা- তার সবটাই পরিকল্পনা করুন নিজেই। জীবনটা আপনার। মহাকবি রুমির ভাষায়, ‘তুমি সাগরে এক বিন্দু পানি নও। তুমি এক বিন্দু পানিতে গোটা এক সাগর।
No comments:
Post a Comment